Need Help, Talk to Expert : 01771-661143

Working Hours : Monday to Friday (9am - 5pm)

পিক সিজন সত্ত্বেও বাসা-অফিস বদলের হার ৫০-৫৫ শতাংশ কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী মৌসুম ছাড়া তাদের এই ব্যবসা স্বাভাবিকে ফিরবে না।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর সাধারণ ছুটি শেষে ব্যয় সংকোচনের কারণে বাসা-অফিস বদলের হিড়িক পড়লেও পিক সিজনে এসে এই খাতের ব্যবসা অন্যান্য বছরের স্বাভাবিকের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী মৌসুম ছাড়া তাদের এই ব্যবসা স্বাভাবিকে ফিরবে না।

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে দেশে ২০২০ সালের ২৬শে মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। আর একই বছরের ৩০ মে তে এই ছুটি শেষ হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধারন ছুটি শেষ হওয়ার পর জুন-জুলাই-আগস্ট এই তিন মাস তাদের ব্যবসা বেশ ভালো ছিল।

তারা জানান, সাধারন ছুটি শেষ হওয়ার পরপরই কোভিড সংকটে পড়ে সে সময় অনেক মানুষ চাকুরি হারিয়েছে। কেউ আবার বেতনের অর্ধেক পেয়েছে। সে সময় মানুষ আসলে বুঝতে পারছিল না, পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরতে পারে। তাই সে সময় অনেকেই ঢাকা ত্যাগ করেছেন, কেউ আবার ঢাকার মধ্যেই কম ভাড়ার বাসা-অফিস বদল করেছেন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। তাই সাধারণত বছরের এই সময়ে এসে যারা বাসা বদল করতেন, তারা এবার করছেন না। আর যারা ঢাকার ও এর বাইরে বাসা-অফিস বদল করেছেন, তাদেরও আগের অবস্থানে ফেরার হার কম।

বাসা-অফিস বদলের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা সারা বছর কম-বেশি ব্যস্ত থাকলেও ডিসেম্বর থেকে মার্চ- এই সময়টাকে তারা তাদের ব্যবসার পিক সিজন হিসেবে ধরে থাকেন।

এদিকে বাসা-অফিস বদল ব্যবসা খাতে গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানের বাইরে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কমিশন এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। এরা মূলত এলাকাভিত্তিক ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে।

কতটা কমেছে বাসা-অফিস বদল?

কোভিড সংকটে বাসা-অফিস বদলের সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর কেউ কেউ তাদের কর্মী ছাটাই করেছে। মুভ অ্যান্ড সেটেলের কর্ণধার শয়ন চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘কোভিড সংকট ও পিক সিজনে ব্যবসা খারাপ হওয়ার কারণে আমি আমার অফিসের ৩ জন কর্মী ছাটাই করতে বাধ্য হয়েছি’।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু ঢাকাতেই প্রতি বছর তিন থেকে চার লাখের মত মানুষ বাসা-অফিস বদল করে। আর ২০১৯ সালের সঙ্গে তারা যদি ২০২০ সালের তুলনা করেন, তাহলে এই খাতে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

কম ভাড়ায় ঝুঁকেছে মানুষ

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধারণ ছুটি শেষ হওয়ার পরপরই ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী ও উত্তরা থেকে বাসা-অফিস বদল করে অনেকেই কাঁঠালবাগান, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বসিলা, ঢাকা উদ্যান, আটিবাজার ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় শিফট করেছেন।

রুহুল আমিন, ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকুরি করেন। মোটা অংকের স্যালারি পেতেন। কিন্তু কোভিড সংকটে পড়ে তার বেতন অর্ধেক হয়ে যায়। তিনি বনানী থেকে বাসা বদল করে এখন মোহাম্মদপুর এলাকায় থাকছেন। তিনি টিবিএসকে বলেন, ‘বাধ্য হয়েই বাসা বদল করেছি। সংকট এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে পারলে আবার ওই এলাকায় ফিরে যাব’।

ঢাকায় ফেরার হার অর্ধেকেরও কম

এদিকে সাধারণ ছুটি শেষে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ভাড়াটিয়ারা বাসা ছেড়ে দিয়ে কুড়িগ্রাম, রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, কুষ্টিয়া, লালমনিরহাট ও খুলনা এলাকাতে বেশি গিয়েছেন।

বাসা বদলের ব্যবসায় জড়িত ব্যবসায়ীরা টিবিএসকে বলছেন, যারা কোভিড সংকটে ঢাকা ছেড়েছেন তার মধ্য থেকে দশ শতাংশের হিসেবে ৩ শতাংশ মানুষ আবার ঢাকা ফিরেছেন।

তবে যারা ঢাকার ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী ও উত্তরা থেকে বাসা-অফিস বদল করে আরেকটু কম খরচের এলাকার দিয়ে গিয়ে বাসা-অফিস নিয়েছিলেন, তাদের আগের অবস্থানে ফেরার হারের কথা যদি বলি-সেখানে দশ শতাংশের মধ্যে তিন শতাংশের মত মানুষ আবার আগের অবস্থানে ফিরেছে’।

এদিকে ঢাকায় বাসা-অফিস বদলের জন্য পেশাদারিত্বের সঙ্গে দশটির মত প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও রাজধানীতে এলাকাভিত্তিক ব্যক্তি উদ্যোগেও অনেকে এই ব্যবসা করে থাকেন। এই খাতে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে বলে মনে করেন এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা।

মিরপুরের এমনই একজন সাইফুল ইসলাম। তিনি টিবিএসকে বলেন, ‘আমার দুটি চায়ের দোকান রয়েছে। পাশাপাশি ৫টি ভ্যান গাড়ি রয়েছে। আমি প্রথমে ভ্যানের মাধ্যমে বাসা-অফিস বদল করতাম। ব্যবসা ভালো হতে থাকায় আমি বছর দুই আগে একটি ছোট পিকআপ ভ্যান কিনেছি। ব্যবসা খারাপ নয়’।

Leave a Reply

Go To Top